একজন উম্মাতের অনূভুতি

Omar SaeedOmar Saeed
3 min read

বিচ্ছুরিত একটি আলোকরশ্মি,যার প্রভায় বুসরার প্রাসাদসমূহ আলোকিত হয়ে গেল।মা আমিনার সেই স্বপ্ন বাস্তবিকই এমন এক মহামানবের প্রতি ইঙ্গিত করেছিল,যার আলোয় আজ সারা দুনিয়া উদ্ভাসিত। যিনি হাজার শিশুর মাঝে একটুকরো বিস্ময়, যিনি হাজার যুবকের মাঝে একটুকরো আদর্শ। যিনি রব্বুল আলামীনের একজন বার্তাবাহক। যিনি ইব্রাহীম (আ) এর দোয়ার ফসল।

তিনি হলেন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসূল মোহাম্মাদ ﷺ।

আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। "আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ"

যদি আপনার কাছে এই নগন্য উম্মাতের সালাম ও অনুভূতি প্রজাপতি হয়ে উড়ে যেত, তবে হয়তোবা এ হ্রদয়ের আকুলতা খানিকটা স্থিমিত হত। আপনার আগমন তো বিশ্বাসীদের জন্য ছিল এক অধ্যায়ের শুরু, যার পাতায় পাতায় বিশ্বাসের শীতল পরশ ছড়ানো। আপনার জীবন তো একটি দীর্ঘ যাত্রা। এই দীর্ঘ যাত্রায় অনুভূতির সঞ্চার হয়।

আরবী মাসে,পাঁচশত সওর খ্রিষ্টাব্দে আল্লাহ সুবহানু তায়া’লা আপনাকে এ জমিনে প্রেরণ করেন।আপনার এ শুভ আগমনে সারা সৃষ্টিকূল আনন্দিত হয়েছিল। আপনি তো মহান রব্বুল আলামীনের প্রসংশাপ্রাপ্ত। তেমনি আপনিও আল্লাহর শোকরিয়া আদায়কারী। "মোহাম্মাদ" ও "আহমাদ" নামের স্বার্থকতা তো সেখানেই। এ উম্মাহ'ও আপনাকে পেয়ে আনন্দিত। কারণ আপনি এমন এক আলোকিত ব্যক্তি,যা ভাষায় ব্যক্ত করা কঠীন।

পবিত্র কুরআনুল কারিমে আল্লাহ সুবহানু তায়া’লা বলেন, “হে নবী,আমি আপনার মর্যাদাকে সবার উর্ধ্বে স্থান দিয়েছি”

মহান রব্বুল আলামীনের কাছ থেকে এটা উম্মাহ'র এক বিশাল প্রাপ্তি। সীরাতের কালি যখন আরও কিছুদূর এগিয়ে যায়,ছয় বছর বয়সে নবিজীর স্নেহময়ী মাতা মারা যান। আবার আট বছর থাকাকালীন তাঁর স্নেহময় দাদাও ইনতিকাল করেন। মা-বাবা হারা নবিজীর মাঝেই আল্লাহ সুবহানু তায়া’লা ইয়াতীমের প্রতি মমত্ববোধ দান করেন। আল্লাহ সুবহানু তায়া’লা নবিজীর চরিত্রে সবার জন্য আদর্শ তুলে ধরেছেন। যার কারণে তিনি ছিলেন "আল-আমিন"।

আল্লাহ সুবহানু তায়া’লা রাসূল (স) কে রিসালাত দিয়ে গৌরবান্বিত করেন। তিনি সমগ্র মানবজাতির জন্য নবী মনোনিত হলেন।রাসূল (স) সবাইকে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াহ দেওয়া শুরু করলেন। তিনি তাওহীদের বাণী উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করেন। তিনি ঘোষণা দেন "আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ (স) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল"। বিশ্বাসীরা তখন এক নতুন আলোর সন্ধান পেল।তারা আল্লাহ সুবহানু তায়া’লার কাছে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ করল।সত্য প্রচার করতে গিয়ে তিনি নির্যাতিত হয়েছিলেন,তার সম্মানে আঘাত করা হয়েছিল। কিন্তু উম্মাহ'র চিরমুক্তির জন্য তিনি হার মানেননি। মুশরিকরা তাঁর এ দাওয়াহ'কে বিলুপ্তির হিংসাত্মক পথ বেছে নেয়। আল্লাহর নির্দেশে আপন জন্মভূমি ত্যাগ করেন। তবুও সত্যের আহ্বান থেকে তিনি বিন্দুমাত্র সরে যাননি। তার উপর সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদাত ৫ ওয়াক্ত সালাত অবতীর্ণ হয়। কালের পরিক্রমায় অবশেষে ইসলামের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়।

এভাবে সীরাতের পাতা এগিয়ে যেতে থাকে।

বিদায় হজ্জের ভাষণে তিনি বলেছিলেন," আমি কি আল্লাহর দ্বীন মানুষের কাছে পৌছাতে পেরেছি?"সেদিন জনতা সমস্বরে "হা" বলেছিল। এভাবে তিনি সত্যকে মানুষের কাছে পৌছিয়ে দেন।

অবশেষে তার চলে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে। তিনি তাঁর অন্তিম মুহূর্তে বলেছিলেন "জান্নাতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ যে বন্ধু তাঁকে আমি চাই"।

তিনি এই উম্মাহ'দেরকে ফেলে চলে গেলেন। যেই উম্মাহ'দের তিনি ভাই বলে ডেকেছিলেন,যারা তাঁকে না দেখেও বিশ্বাস ঈমান আনবে,তাদের একা ফেলে তিনি আল্লাহর সান্যিধ্যে চলে গেলেন। সেই মুহূর্তের কথা মনে পড়লে সারা মুসলিম উম্মাহ'র হৃদয় বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। দু'নয়ন অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়। এ অনুভূতি কোন ছন্দের বুলি দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। শুধু একটা কথাই হে রাসূল আপনাকে বলতে চাই।

আপনার উপর আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক।

❝ আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ".......❞

0
Subscribe to my newsletter

Read articles from Omar Saeed directly inside your inbox. Subscribe to the newsletter, and don't miss out.

Written by

Omar Saeed
Omar Saeed